Saturday 12 March 2022

মৃত্যু --- শান্তা মিএ

মৃত্যু --- শান্তা মিএ

এ পোড়া দেশে মোরা মরি আর মরি।
অসুকে মরি দারিদ্র্যের তাড়নায় মরি 
অ্যাক্সিডেন্টে মরি অমিক্রণ করোনা নামক ভিন্ন ভেরিয়েন্টে মরি,
বিভিন্ন  ঝড়ের দাপটে মরি,
খাবারের জোগাড়ের জন্য মরি।
ছলনা চিটিং এ মরি আত্মহত্যায় মরি....
নিজের মধ্যে নিজেই মরি মনে মনে মরি,
ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য মরি,
লোকের ভালো দেখে মরি হিংসায় জ্বলে পুড়ে  মরি।
ভালোবাসার জন্য মরি ভালোবেসে মরি....
নানা  অশান্তিতে শুধুই মরি কেনইবা মরি কিসের  জন্য ..... কেন এমরণ বলতে পারো!!
টিকা ওষুধ যোগা এসব তো বাঁচার জন্য।
সত্যি কি বাঁচি আমরা...নাকি বাঁচার জন্য  শুধু বাঁচি......!

Sunday 6 March 2022

জীবন-- সন্ধ্যা রায়

জীবন 
সন্ধ্যা রায়

জীবন তুমি দিয়েছ অনেক--
আর একটা বছর পার হল 
কোথাও আমায় উপেক্ষা 
কোথাও আমার অপেক্ষা।
জীবন তুমি দিয়েছ অনেক--
বছরের শেষ রজনী তুমি দিলে
কত আশা আকাঙ্খা ছেড়ে এলাম 
কত জন মিলেছে কত জন ভুলেও গেছে 
কেউ বা খুশি তে জড়িয়ে ধরেছে।
জীবন তুমি দিয়েছ অনেক--
কত স্মৃতির মিলন এ জীবনে 
কত না পাওয়ায় কেঁদেছি এক কোণে 
কেউ বা ভালোবেস কেউ বা রেগে
কেউ বা  জাড়ালো আবেগে।
জীবন তুমি দিয়েছ অনেক-- 
কেউ বা চেনা কেউ বা অচেনা 
কেউ তো আবার চিনেও চেনে না।
কিছু ঠিক কিছু ভুলও করেছি
কিছু সুখ কিছু দুঃখ দিয়েছি,
মাফ কর আজ ভুল যা করেছি,
হিসেবের খাতায় সবই পেয়েছি,
জীবন তুমি দিয়েছ অনেক।।

কোদাল নাও--অদিতি ঘটক

কোদাল নাও--
অদিতি ঘটক

ওরা অনেক বার এসেছে 
মুখোশ পরে, মুখোশ খুলে
 নরমে, গরমে একটাই কথা বলেছে
আমি ওদের বলেছি, সম্ভব নয়
আমি পারব না 
যুদ্ধ করতে
আমার ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করতে।
ওরা বলেছে, শিখিয়ে দেব
আমরাও আগে অপটু ছিলাম।
বলেছি, করে লাভ ?
বলেছিল ভালো সময় কাটে 
সুন্দর নেশা হয়
বলেছি, এর থেকে ভাতঘুম আমার ঢের জরুরি
আর এটাই একমাত্র উৎকৃষ্ট নেশা
 ওরা অবাক হয়ে আমার দিকে চেয়েছিল
 তারপর জানলার দিকে চেয়ে
 ফুটিফাটা মাঠটা দেখে চোখের জল ফেলছিল
ওদের ভারী বুট আর বন্ধুকের বাট ঠোকাঠুকি বন্ধ করে দিয়েছিল
এগিয়ে গিয়ে ওদের কাঁধে হাত রেখে
কানে কানে বলেছি---
 কোদাল নাও। 
তোমার ছায়াও নেবে। 

###################

তাপসকিরণ রায়ের কবিতা --


তাপসকিরণ রায়ের কবিতা --

ডাল ভাত 

আমি ডাল ভাত খেয়ে বড় হলাম

এবং একদিন ডাল ভাত খেতে খেতে…

এবং আমার মত কোটি কোটি 

মানুষগুলি ঠিক এমনি ভাবে 

জীবনের শেষ অংক পার করে গেল... এবং তুমি সে পৃষ্ঠা সরিয়ে রাখলে, নেহাত কলমের দু'খোঁচায় 

লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনীএঁকে দিলে।  শেষ, ওরা ডাল ভাত খেয়ে চলে গেল..   

আর কিছু লেখা নেই, 

দুটো দাড়িচিহ্নে শেষ হল-- 

সভ্যতার সিংহভাগ।


কুয়াশা সরিয়ে যাচ্ছি


কুয়াশা সরে গিয়ে 

অন্য আর একটা দৃশ্যের অপেক্ষায় ছিলাম।

তোমার শরীরান্তর থেকে ভ্যানিশ ম্যাজিকের আরম্ভ হয়েছিল l

রহস্য এখান থেকেই শুরু--

একটা সত্ত্বা কিলবিলিয়ে উঠলো

আর আমি তোমায় পাবার অপেক্ষায় কুয়াশা সরিয়ে যাচ্ছি, আর সরিয়ে যাচ্ছি…


অ্যালবামের বাইরে


একটা ক্লিক এ ক্যামেরা জীবন 

একটা বন্দিজীবন ও ক্যামেরা জীবন দুচোখ কতবার মিলেছিল, 

সংখ্যায়িত সে সব দৃশ্যপট, স্নাপের এপিঠ-ওপিঠ।

ছায়াহীন ছবিহীন কবিতার ঘেরে-- তুমি আমি প্রতিদিনের ঘুম ও রাত জাগা,

ভাসাভাসা চেহারার টানে, 

শব্দহীন ছন্দ, দুর্দান্ত একটা জীবন,

কত তাড়াতাড়ি সরে যায়, 

সুখের সাগরে বারবার পা পিছল ছলাত, 

অ্যালবামের বাইরে

এক দীর্ঘ জীবন থেকে গেছে।


সীমা ব্যানার্জী রায় --ফড়িং ডানা...

সীমা ব্যানার্জী রায় --
ফড়িং ডানা...

শোনো! আজ লিখি তোমায় ...
আমার জানলার বাইরে যে 
ক্যামেলিয়া ফুলের গাছটা...
তাতে কুঁড়ি ধরেছে আনমনে
বরফ রঙের রোদে ডানা ভাসিয়ে 
দুটো ফড়িং শুধু ভালোবাসাবাসি
করে দিনভোর।

তাই গোপনে জানাই...
আমার আনমনা চেয়ে থাকা 
জানলার বাইরে দিয়ে...
বাতাস বয়ে যায়,
ভালবাসার গন্ধ নিয়ে।

এ কোনো উপমা নয়
চাইনিও মেলাতে আমি
শীত তো শোনে না কারো কথা 
মাটিতেই পুঁতে রাখে নিজস্ব নীরবতা
চিন্তা শুধু কফি কিংবা চায়ে।

আমার ভাবনারা ছুটে বেড়ায়...
কিশোরী নদীর মতো বিস্মৃতির স্রোতে 
একদিন আমিও ফড়িং ডানায়...
একদিন আমিও বরফ রোদে-
গা ভাসাবো তোমার দিকে চেয়ে ।

শেষে লিখি তোমায়...
তুমি ভয় পেয়ো না,
আমি বহু দূরে আছি...
শুধু একবার বলো,
তুমি আমাকেই ভালবাসো।
সত্যি বলছি নির্ভয়, কোনদিন আর
কিছু চাইব না...

কবিতা কখন আসবে তুমি?--তমা কর্মকার

কবিতা কখন আসবে তুমি?--
তমা কর্মকার

কখন আসবে তুমি ফিরে?
চলে যাওয়া পথ ধরে|
আমি যে আজও তোমার,
ফিরে আসার অপেক্ষায়|
মনে করে দেখো তুমি,
তোমার চলে যাবার পরে?
কেটে গেছে কত কাল?
ফুলের রঙে সেজেছে কত
প্রাণ প্ৰিয় রঙিন বসন্ত |
আমি  বসন্তের কোকিলের মতো
আজও করছি তোমার অপেক্ষা|
জানি ভুল ভেঙে গেলে?
তুমি দিশাহীন ভাবে খুঁজবে,
আমায় তোমার মনের অন্তরালে|
তাইতো তোমায় ছেড়ে আমিও
যেতে পারিনা অন্য কোথাও|

বহ্নি শিখার(ঊষা দত্ত) গুচ্ছ কবিতা --

বহ্নি শিখার(ঊষা দত্ত) গুচ্ছ কবিতা --

নাই বা হলো'

ঘুমিয়ে পড়,নিভে গেছে,রাতের আলো,।

নেমেছে জোনাকির ঝাঁক,

সাগরের মুখ গহ্বর থেকে ছোঁয়ে যাক-
জিভের ডগায় রুপোলী বালুকা বেলা। 

ঢেউয়ে ঢেউয়েই পেরিয়ে যাক,তাবৎ

দিনের ঘর্মাক্ত কলেবর হতে বাষ্প,

 মিলিয়ে  যাক দিগন্তে,না বলা কথারা, 

না-ই-বা হলো শব্দের বর্ণের মিলন। 

 না হোক ধোঁয়ার কুন্ডলীর মতো উর্ধগামী স্বপ্ন পূরণ,

অনুভবে সতেজ  শিরাগুলো  টান টান, 

নিভৃত রাত্রির গায়ে জ্বলে থাকুক 
স্বর্ণালী তারাদের অহংকার। 
—---

জ্যান্ত লাশ ঘর

অবশেষে নীলাকাশটা ধুসর শূন্যতা নিয়ে সাগরের সাদা বুক--

খা খা রোদ্দুরে মিশে গিয়ে  দিগন্তে 
ফসল শূন্য এক উদাসী বক, 

নিভে যাওয়া সূর্যের আকাশ ফ্যাকাসে শরীরে চুপ করে একা,  

সব বিরহভার বয়ে যেনো তার জীবনপাটের সরব নিস্তব্ধতা,

নিঃসঙ্গতার অলীক আলোর জোনাক সাধনায় ব্যস্ত থেকে--

ঘটো'পরে মা আমার শ্বেতপদ্মের মতো বসে থাকে সারাদিনই,

জীবনের লাশঘরে ফাকুন্দা পড়া কষ্ট  নিয়ে। 
—----



চাঁদ নয় কাস্তে


ইচ্ছে গুলো কাস্তের মতো ধারালো হওয়া চাই,

নয়তো  আকাশের ওই কাস্তের মতোই থেকে যাবে,

 বাস্তবের  নাগালের বাইরে,

ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে স্বপ্ন দেখা,  প্রাপ্তির সকল  ইচ্ছে ফসল।

বিছে পোকার ধারালো জিহবা খেয়ে নেবে সবুজ স্বপ্ন।

জোনাক পুচ্ছের আলোক ধাঁধায় কেটে যাবে সহস্র জনম, 

গোলা থেকে বেরুবে না তৃপ্তির 
স্বচ্ছ সাদা দাঁতের আলোকময় দিপ্তী, 

ভোঁতা কাঁচির সরল জৌলুস চিরদিন কেড়ে নেয়  কোলের নুন ভাত। 
--------------


ভাগ করে নাও


প্রহর গুনি  তোমার কথা শুনতে,
 সে কি তুমি বুঝোনা?

দ্বিধা লাগে,আমার খুব  দ্বিধা লাগে–
সে কথাটি বলতে। 

তুমি যে কার গোপন আকাশ শুধু জানতে চেয়ো না,

কথায় কথায় যদি আমার সকল কথার মানেই খোঁজো–


কি করে বলি? আমার অনেক কথার নেই কোনো মানে। 

একটু ভালোবেসে মন বাড়িয়ে কষ্টগুলো সব ভাগ করে নাও তুলে। 

----------


এতো রাগ করলে কি চলে?



এতো রাগ করলে চলে?
তুমি একা,আমি বহু।
নিজে নিজের মন যুগিয়ে চলো।

আমি উপেক্ষা করতে পারিনা-
লতা পাতা,ডাটা শেকড় কোন কিছুকে।

ওদের নিঃশ্বাস আমার মধ্য দিয়েই,
আমি জল হলে ওরা বাঁচে।
বাতাস হলেই দুলে। 

তুমি অনুকূল না হলে আমি আর আমাতেই থাকি না,
এতো রাগ করলে চলে?

--------

মৃত্যু --- শান্তা মিএ

মৃত্যু --- শান্তা মিএ এ পোড়া দেশে মোরা মরি আর মরি। অসুকে মরি দারিদ্র্যের তাড়নায় মরি  অ্যাক্সিডেন্টে মরি অমিক্রণ করোনা নামক ভিন্...